modhon
(Active Member)
***

Registration Date: 06-01-2019
Date of Birth: Not Specified
Local Time: 15-04-2025 at 07:19 AM
Status: Offline

modhon's Forum Info
Joined: 06-01-2019
Last Visit: 28-03-2024, 12:27 AM
Total Posts: 268 (0.12 posts per day | 0.01 percent of total posts)
(Find All Posts)
Total Threads: 8 (0 threads per day | 0.02 percent of total threads)
(Find All Threads)
Time Spent Online: 1 Week, 1 Day, 6 Hours
Members Referred: 0
Total Likes Received: 449 (0.2 per day | 0.02 percent of total 2864387)
(Find All Threads Liked ForFind All Posts Liked For)
Total Likes Given: 206 (0.09 per day | 0.01 percent of total 2824794)
(Find All Liked ThreadsFind All Liked Posts)
Reputation: 20 [Details]

modhon's Contact Details
Private Message: Send modhon a private message.
  
modhon's Most Liked Post
Post Subject Numbers of Likes
RE: ডাকাতের বউ by hotmirch 11
Thread Subject Forum Name
ডাকাতের বউ by hotmirch পুরনো সংগৃহীত গল্প
Post Message
ভোরবেলা আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেল শালবাড়ীগ্রামের সদানন্দ ব্রহ্মচারীর। একি দেখলেন তিনি??? স্বপ্নে মা তাঁর দিকে তাকিয়ে হাসছেন!!! কেন? যেন তাঁকে ডাকছেন মন্দিরে? কোনও এক বিশেষ কর্তব্য পালনের জন্য? কি সেটা?
বিছানার উপর উঠে বসলেন তিনি।
জীবনের উপান্তে পৌঁছন সাতাশী বছরের সন্তানের কাছে সর্বশক্তিময়ীর এ কোন নির্দেশ???
সাতাশি হোক আর সাতানব্বই, সদানন্দকে দেখলে কিন্তু অন্যরকম মনে হতে বাধ্য। দীর্ঘ ঋজু শরীর, মাথার চুল ধপধপে সাদা, উজ্বল গোধূমবর্ণ ত্বক। টানা টানা স্নিগ্ধ শান্ত চোখের দিকে তাকালে যে কারুরই মনে সম্ভ্রম ভক্তি আসবেই। শুদ্ধ সংস্কৃত উচ্চারণে, মন্দ্র স্বরে যখন তিনি কল্যানেশ্বরির মঙ্গলারতি করেন তখন উপস্থিত ভক্তকূল এক অপার্থিব ঈশ্বরিক পরিবেশের সন্মুখীন হয়। অকৃতদার সৌম্যদর্শন যোগীবরকে স্থানীয় মানুষজন থেকে শুরু করে দূর দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থী, প্রত্যেকেই অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে।
আদি কালিকাপুরাণ অনুযায়ী দেবীর একান্ন পীঠের অন্যতম এই ত্রিস্রোতা বা তিস্তার পাড়ে অবস্থিত শালবাড়ীগ্রাম। সতীবিরহে উন্মাদ ধূর্জটির প্রলয়ঙ্কর নাচের সময় চক্রাঘাতে খন্ডিত হতে থাকা সতীদেহের বাম পদের অংশ পতিত হয় এই স্থানে। দেবী এখানে ভ্রামরীরূপিণী। প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে সদানন্দ, মায়ের একনিষ্ঠ ও প্রধান পুরোহিত।


দরজা খুলে বাইরে এসে দাঁড়ালেন সদানন্দ ব্রহ্মচারী। মন্দিরসংলগ্ন কুটিরটির সামনে ফুলগাছ সম্বলিত এক ছোট্টো বাগান, দু তিন রকম জবাগাছ, শ্বেতআকন্দ, গোলাপ, গন্ধরাজ ইত্যাদি। অন্যমনস্ক ভাবে ফুলের সাজিটা তুলে নিলেন ব্রহ্মচারী। বাগানটা ঘুরে ঘুরে বেশ কিছু ফুল তুললেন তাতে। তারপর সাজিটা দাওয়ার এক কোনায় রেখে ঘরের পেছন দিকে গিয়ে মুখ হাত ধুয়ে নেন। উদ্বিগ্ন দৃষ্টিতে তাকান বড় রাস্তার দিকে।
আজ দুজন নারী-পুরুষ আসবে এই সতীপীঠে মায়ের মন্দিরে… আসবেই। দেবীকে সাক্ষী রেখে তাদের দুজনকে একে অপোরের হাতে চিরকালের জন্য তুলে দেবেন সদানন্দ।
এ দেবী ভ্রামরীর আদেশ!!! এর অন্যথা হওয়ার নয়।
তিনি গিয়ে মন্দিরের দুয়ার খুললেন। নিজ হাতে গর্ভগৃহ পরিষ্কার করলেন। দেবীঅঙ্গ থেকে গতরাতের ফুল, মালা, বেলপাতা সব সরিয়ে বাইরে গিয়ে জড়ো করে রাখলেন।
সকাল হল, মন্দিরের অন্যান্য সেবাইতরা উপস্থিত হল। তাদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট করা কাজে তারা লেগে গেল। পূজার উপকরণ যোগাড় থেকে শুরু করে ভোগের আয়োজন ইত্যাদি ইত্যাদি। দর্শক, ভক্ত, তীর্থযাত্রী সমাগমে মন্দিরচত্বর হয়ে উঠল কোলাহলপূর্ণ… কিন্তু তারা কই?? এদিকে সকালের পূজোর সময় এগিয়ে আসছে! অন্তরে অস্থির হয়ে উঠলেন সদানন্দ। দেবীআজ্ঞা কি তবে বিফল হবে? তিনি ব্যাকুলনেত্রে তাকালেন মায়ের মুখের দিকে।
“ঠাকুরমশাই?” এক শান্ত অথচ গভীর স্বর।
ডাকটা কানে যেতেই চকিতে পেছন ফিরলেন সদানন্দ ব্রহ্মচারী। ভিড়ের ভেতর থেকে অল্প দূরে, মূল বিগ্রহমন্ডপের কারুকার্যময় থামের পাশে এক কৃষ্ণকায় দীর্ঘ যুবাপুরুষ একমাথা ঘোমটা টানা এক নারীকে পাশে নিয়ে দণ্ডায়মান।
ডাকটা এসেছে পুরুষটির কন্ঠ থেকে।


শান্ত স্মিত দৃষ্টিতে দুজনকে নিরীক্ষণ করলেন সন্ন্যাসী। আড়ম্বরহীন মার্জিত বেশভূষা সত্বেও এই দুজনের চেহারার মধ্যে এমন কিছু আছে যা স্বতন্ত্রতায় উজ্জ্বল। হাজার জনসমাবেশের ভেতর থেকেও এই যুগলমূর্তি সম্পূর্ণ আলাদা, অন্যন্য।
পুরুষটির হাতে ধরা মায়ের পূজোর উপাচারে ভর্তি একটি মাঝারি আকারের ঝুড়ি। স্ত্রীলোকটির দুই হাতে ধরা এক রূপোর রেকাবীতে মায়ের রক্তবস্ত্র, সিঁদুর, আলতা, শাঁখা ইত্যাদি।


অপরদিকে নবীন-সরযূ দর্শন করলো এক তেজদীপ্ত সন্ন্যাসীকে। পিতৃপ্রতিম অবয়বটির থেকে পরমাত্মার শান্তিময়তা যেন আপনা আপনিই বিচ্ছুরিত। দুজনে এগিয়ে গেল সন্ন্যাসীর দিকে।
একজন সহকারী সেবাইতকে ডেকে পূজোর সামগ্রী ও রেকাবী তার হাতে তুলে দিলেন সদানন্দ। নারী-পুরুষ তাঁকে নতজানু হয়ে প্রণাম করাতে হাত তুলে আশীর্বাদ করলেন পরম প্রশান্তিতে। আপন সন্তান স্নেহে তাদের নিয়ে গিয়ে বসালেন মায়ের বিগ্রহের সামনে।
দেবীর আদেশ পালনের সময় উপস্থিত। আর দেরী নয়।


প্রায় ঘন্টা দুই পরে নবীন ও সরযূকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন সদানন্দ ব্রহ্মচারী মায়ের গর্ভগৃহ ছেড়ে। মন তাঁর প্রফুল্লতায় ভরপুর। বহুদিন পরে একটা কাজের মতো কাজ তিনি সুসম্পন্ন করতে পেরেছেন। নবীনের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছে এক অদ্ভুত উষ্ণতা, বেশ হাল্কা লাগছে নিজেকে গোঁসাইয়ের ব্যাটা’র!!!
আর সরযূ…? কেমন যেন অন্তর্মুখী, চাপা ভাবগম্ভীরতা বিরাজ করছে তার অসামান্য সুন্দর মুখখানিতে।
দুজনে একসাথে সন্ন্যাসীর পদধূলি নিয়ে রওনা হল বাড়ীর পথে। যতক্ষণ দেখা যায় একভাবে সেদিকে তাকিয়ে রইলেন সদানন্দ ব্রহ্মচারী, তারপর পথের বাঁকে কালো ঘোড়া অদৃশ্য হতে উৎফুল্ল চিত্তে ঘুরলেন উপস্থিত ভক্তবৃন্দের দিকে। এক অস্বাভাবিক ঘটনার ভেতর দিয়ে এই দুই নর-নারী পরস্পরের কাছে এসেছে। একে অপোরের মধ্যে খুঁজে পেয়েছে নিজেদের সার্থকতা। কোনভাবে এরা যদি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে করুণাময়ীর ওপর থেকে মানূষের বিশ্বাসটাই উঠে যাবে যে…!
শেষ লড়াইয়ে ন্যায় জিতবে না অন্যায়… সেটা নাহয় ভবিষ্যৎ বলুক!!!


আজ অসাধারণ রেঁধেছে পরমা। আর নাই বা কেন? সেই সক্কালবেলা দুটিতে বার হয়েছে আর ফিরল এই বিকেলে! সারাদিনে ত কোন দানা দাঁতে কেটেছে কি না সন্দেহ!! মা-ঠাকুরানির মুখের দিকে তাকাতে পারছিল না পরমা।বুক ফেটে কান্না আসছিল তার। ভাগ্যিস রান্না-বান্না করে রেখেছিল! না হলে কি আতান্তরটাই না হত আজকে?
সন্ধ্যেবেলা নিতাইকে ডাকল নবীন।
“কি খবর এসেছে?” গম্ভীরভাবে জিজ্ঞাসা করলো সে।
চমকে উঠল নিতাই। সর্দার কি জাদু জানে নাকি? কারণ যে খবর একমাত্র সে ছাড়া আর কেউই জানে না, সেটা সর্দারের কানে গেল কি করে???
নিতাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল নবীন। সন্ধ্যের অন্ধকারেও হাসির একটা রেখা দেখা দিয়েই মিলিয়ে গেল নবীনের মুখে।
“খবরটা তো আমার জন্য, তাই না?” স্বর একটু নরম করেই বলল সে।
নবীনের পা দুটো জড়িয়ে ধরল নিতাই।
“আমি তোমাকে বলারই সুযোগ খুঁজছিলাম। সারাদিন পরে দুটো মুখে দিচ্ছ, তখন কি বলা যায়?” হাঁউ মাঁউ করে উঠল সে।
“আঃ! নেত্য আস্তে! কেউ শুনতে পাবে।” মৃদু ধমক দেয় নবীন। তারপর নিতাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে ওঠে…
“বেশ তো, এখন খুলে বল?”
তা খুলেই বলল নিতাই।

একটু বেলায় বৈকুন্ঠপুর হাটের দিকে গিয়েছিল নিতাই। কিছু কেনাকাটা আর তার সাথে এমনিই কিছু খবরা-খবর।
হাটের ভিড়ের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ তার চোখ পড়ে ব্রজ গায়েনের জিলিপির দোকানের দিকে।
বেশ একটা জটলা তৈরী হয়েছে সেখানে। তা ব্রজর দোকানে ভিড় হবে এ আর বেশী কথা কি! তার হাতের জিলিপি যে না খেয়েছে তার ত জীবনই বৃথা! কিন্তু ভিড়ের কারণটা জিলিপি নয়… সেটা হচ্ছে যে কিছু মানুষের উত্তেজিত আলোচনা। সুতরাং ঘরামির পো নিতান্ত ভালমানুষের মতো গিয়ে জুটলো সেই ভিড়ে। গিয়ে যেটা শুনল সেটা বেশ অবাক করা খবর।
এমনিতে বৈকুন্ঠপুরের হাট বেশ নামকরা। আশপাশের দু দশটা গঞ্জের লোক হাজির হয়। দূর দূরান্ত থেকে চাষী, কুমোর, পাইকার, তাঁতী, জেলে থেকে শুরু করে স্থানীও খুচরো ব্যাবসাদার প্রত্যেকে এই হাটের অংশীদার।


সক্কাল বেলা থেকে সন্ধ্যে নামা অবধি রীতিমতো এক বিরাট মেলার আকার নেয় এই কেনাবেচার আসর। হেন কিছু নেই যা পাওয়া যায় না এই দিনে। এবার এর মাঝখানে এক ভয়ঙ্কর সাধুর নাকি দেখা পাওয়া গেছে আজ। দৈত্যকায় চেহারা, সর্বাঙ্গে ছাই মাখা জটাজূটধারী এক কৌপীন পরিহিত সন্ন্যাসী। একহাতে এক ভয়াবহ সিন্দুরমাখানো ত্রিশূল আর অন্যহাতে ধরা এক কুচকুচে কালো ষাঁড়ের গলায় বাঁধা দড়ি।কাঁধ থেকে ঝুলছে এক নোংরা তালি মারা ঝোলা। মুখে কোন শব্দ নেই, কথা ত দূরের সম্ভাবনা, ওই রক্তজবার মতো চোখের দিকে চাইবারই বলে কারুর জো নেই!!!

অন্ধকারেও মুখ নীচু করেই আস্তে আস্তে কথা বলছিলো নিতাই। একবার যদি নবীনের মুখের দিকে চোখ তুলে চাইত, তাহলে বোধহয় দেখতে পেত যে এইটুকু শুনেই নবীনের চোখদুটো একবার দপ করে আগুনের মতো জ্বলে উঠেই আবার নিভে গেল। দেখলে ভয়তে শিউরে উঠতো সে।
যাই হোক, যা বলছিলাম…।
সাধুবাবাকে একহাট লোকের মাঝখানে দেখে অনেকেই বেশ কৌতূহলী হয়ে উঠলো।
এইরকম একখানা বাজখাঁই চেহারা সচরাচর দেখা যায় না! বেশ একটা ভিড়ই লেগে গেল সাধুর পেছনে। পায়ে পড়ার মিছিল লেগে গেল যেন। সব্বাই একবার ছুঁতে চায়। কৌপীনধারীর তাতে কোন হেলদোল নেই। কোনদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে সে গিয়ে হাজির হলো একেবারে হাটের মধ্যিখানের চাতালে। হাতের ত্রিশূলটা চাতালের পাশে পুঁতে তাতে ষাঁড়ের গলার দড়িটা দিলে বেঁধে। তারপর জমিয়ে বসে, ঝোলার ভেতর থেকে বার করলে এক গাঁজার কল্কে। ধীরেসুস্থে এক ছিলিম সাজিয়ে তাতে আগুন দিলে।
“তুই দেখেছিস তাকে?” জিজ্ঞাসা করলো নবীন।
“তবে আর বলছি কি কত্তা!!! ব্রজর দোকানে এই কথা শুনেই ত আমি এক্কেরে দৌড় মেরেছি দর্শন করতে।”
“তা কেমন দেখলি?” ব্যাজার মুখে বলল নবীন।
“সেইটাই ত তোমাকে কইবার! বিরাট হলেও এমন কিছু নয় চেহারা। তবে হ্যাঁ, চোখের দিকে তাকালে মনে হয় একটা কেউ হবে।”
“তারপর?” আবার গম্ভীর হলো নবীন।
“তারপর..সে ত গাঁজা টানছে বসে একমনে। এদিকে আশপাশে ভিড় জমে উঠেছে। আমিও ভিড়ের ভেতর দাঁড়িয়ে দেখতে লেগেছি। সাধু শালার কোন হুঁশ নেই। খালি মাঝে মাঝে লাল লাল চোখ তুলে এধার ওধার দ্যাখে আর দম মারে।”
“বলে যা।”
“একটু পরে ভিড়টা পাতলা হতে শুরু করেছে। যে সাধু কোন কথা কয় না, কোন কথার উত্তর দেয় না তার সামনে কতক্ষণই বা বসে থাকা যায় গে। আমি কেন জানি রয়ে গেলাম। এইসময় দেখি কি আমার দিকে জুলজুল করে তাকাচ্ছে লোকটা। এদের আবার অনেক রকম বিদ্যে থাকে ত!! তা আমি তাই ভেবে একটু এগিয়ে সামনে গিয়ে বসলাম।আশপাশে তখনও কিছু লোক আছে, আর আজ হাটের যা ভিড় হয়েছিল… সে আর কি বলব!!!”
“এর মধ্যে সাধু বাবা ছিলিমটা শেষ করে আবার ঝোলা কাঁধে উঠে দাঁড়াল। আর দাঁড়িয়ে যেটা করলো সেইটাই আমায় ধন্দে ফেলে দিয়েছে গো কত্তা! কি করলো জান? আমার দিকে সোজা তাকিয়ে এক এক করে ডান হাতের তিনটে আঙ্গুল তুলে গম্ভীর গলায় বলল…… একে চন্দ, দুইয়ে পক্ষ আর তিনে নেত্য! বলেই শালা ষাঁড়ের দড়িটা খুলে নিয়ে তিশুল তুলে হাটের ভিড়ে হাওয়া!!”
“আমার কেমন জানি সব গোলমাল লাগল এই! এ আবার কেমন কথা??? আর তাও আমাকে কইবার কি মানে? হ্যাঁ গো ঠাকুর এর মানে কি???” গভীর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় নিতাই নবীনের মুখের দিকে।
“ও কিছু না। আচ্ছা নেত্য একটা কথা বল দিকি? সাধুর মুখের একপাশে কি কোন পোড়া দাগ আছে? এই ধর ডান গালের কাছে?” জিজ্ঞাসা করলো নবীন।
“হ্যাঁ-হ্যাঁ একদম নিক্কষ বলেছ কত্তা! ছাই মাখা সত্বেও দাগটা দেখা যায় ভালই। কিন্তু তুমি কি করে জানলে? চেন নাকি???” নিতাইয়ের চোখ বিস্ময়ে বড় হয়ে ওঠে।
“না… এই বৈকুন্ঠপুরেই দু একবার লোকটাকে দেখেছি কিনা, তাই… বলছিলাম।” উদাস গলায় জবাব দেয় নবীন।
নিতাইয়ের সামনে যতই স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুক না কেন, ভেতরে ভেতরে উত্তেজিত হয়ে ওঠে সে। এ সংকেতের মানে একমাত্র সেই জানে। বূড়ো শালার স্বভাব পাল্টালো না! নবীনের সাথে রসিকতার অভ্যাস আজও তার একইরকম আছে। একটু ব্যাঁকা হাসি খেলে গেল তার মুখে।
“শোন নেত্য! আমি দিন দুয়েকের জন্য বাড়ী থেকে বেরবো। তুই কিন্তু সজাগ থাকবি! কোনরকম কিছু…”
“ঘরামিরে পেরনো সহজ নয় গো ঠাকুর!!!” গাঢ় স্বরে উত্তর দেয় নিতাই।
সে বিষয় অবশ্য নবীনেরও সন্দেহ নেই।


কিন্তু সরযূকে জানান দরকার। আজ এতকাল পরে মাধাই সর্দার কেন তাকে স্মরণ করেছে কে জানে। সবকিছু সরযূকে বলা যাবে না। সে ভয় পাবে। তাকে অন্যকিছু বলতে হবে। আর এইখানেই যত মুস্কিল! যে সমগ্র সত্ত্বা দিয়ে, রক্ত, মাংস, হাড়ে-মজ্জায় তার সাথে চিরতরে মিশে যেতে চায়, চায় কি! মিশে গেছে, তাকে মিথ্যে? একি সম্ভব? এত নিজেকে মিথ্যে বলা! নিজেকে নিজের কাছে লুকিয়ে রাখা! তার অতল চোখের দৃষ্টি ত সবকিছুই জানতে পারবে। সে কষ্ট পাবে না? তার কুসুমকোমল হৃদয় ব্যাথা লাগবে না? এই ব্যাথা দেওয়ার অধিকার ত তার নেই। না, এ কিছুতেই হতে পারে না!! তাকে ভালোবাসায়, আদরে, সোহাগে ভরিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোন কিছু ত তার কাছে নেই যে!! অধিকার, অনধিকারের সীমানা পেরিয়ে শুধুমাত্র তার কাছে নিঃশেষে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোন দাবী সে যে নিজের কাছেও করতে পারে না!!!

যা খুশী ভাবুক সরযূ!!! নবীন সব কিছু খুলে বলবে তাকে। থাকুক না কেউ একজন এই পৃথিবীতে, যার কাছে নিজেকে উদোম ল্যাংটো করে তার হাতে তুলে দেওয়ার মধ্যে কোন দ্বিধা, কোন লজ্জা, কোন অনুশোচনা থাকবে না কোনদিন। কোন গর্ব, কোন অহংকারের বেড়াজাল হবে না কোন অন্তরায়। যে অনন্য নারী সত্ত্বা তাকে সবকিছু দিয়ে বরণ করে নিয়েছে, সেই করুক তার মূল্যায়ন।