23-01-2025, 03:45 AM
(This post was last modified: 23-01-2025, 03:53 AM by Damphu-77. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দাদা গল্পটা লিখুন। আশাকরি তাড়াতাড়ি আপডেট পাব।
Misc. Erotica যাদুকর
|
23-01-2025, 03:45 AM
(This post was last modified: 23-01-2025, 03:53 AM by Damphu-77. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দাদা গল্পটা লিখুন। আশাকরি তাড়াতাড়ি আপডেট পাব।
23-01-2025, 03:47 AM
(This post was last modified: 23-01-2025, 03:51 AM by Damphu-77. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দাদা লেখাটা সুন্দর হচ্ছিল। আসা করি তাড়াতাড়ি আপডেট পাবো।
24-01-2025, 02:33 PM
Waiting for next update!!!
04-02-2025, 12:36 AM
নতুন পর্বের আশায় রয়েছি। খুব ভালো কিছু একটা পড়া থেকে বঞ্চিত হবো না এতোটুকু জানি।
04-02-2025, 04:04 AM
ফড়িং শাহ লম্বায় বেশ অনেকটা উঁচু হলেও অলোক প্রথমেই লোকটার কলার চেপে ধরলো। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে পড়লো ফড়িং শাহ। বাচ্চারাও হৈ চৈ শুরু করে দিলো। ফড়িং শাহকে টানতে টানতে স্টেজ থেকে নামিয়ে ধোঁয়ার কুন্ডুলি আর মিউজিক থেকে দূরে সরিয়ে আনলো অলোক। লোকটা দুর্বলভাবে নিজের কলার ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বারবার বলতে লাগলো, "আমি কী করছি স্যার? ছাইড়া দেন আমারে। এমনে টানতাছেন ক্যান?" লোকটা দেখতেও যেমন কুচ্ছিত, গলার স্বরও তেমনি কর্কশ। অলোক কোনভাবেই ওর কলার ছাড়লো না। ইতোমধ্যে অনেকের নজরে পড়ে গেল বিষয়টা। মেলায় একটা শোরগোল শুরু হয়ে গেলে মিউজিক বন্ধ হয়ে গেল। হাউজিং সোসাইটির সভাপতির সেক্রেটারি মন্তাজ ছুটে এসে বললো, "কী হচ্ছে এখানে?"
"আপনারা এই ধরণের লোককে এলাউ করলেন কীভাবে?" অলোক রাগী রাগী গলায় বললো। "কেন? সমস্যা কী হয়েছে সেটা পরিষ্কার করে বলেন। আর আপনি ওর কলার চেপে ধরে আছেন কেন?" "আগে বলেন এই লোক এইখানে ঢুকলো কীভাবে?'' সেক্রেটারি মন্তাজ কিছু বলার আগেই ফড়িং শাহ দৃঢ় গলায় বললো, "আমারে প্রেসিডেন্ট স্যার নিজে অনুমতি দিছে। আমি প্রেসিডেন্ট স্যারের কাছে বিচার দিমু।" সেক্রেটারি মন্তাজ ওর কথায় সায় দিয়ে বললো, "এই খানে যত স্টল আছে সবাই প্রেসিডেন্টের অনুমতি নিয়েই বসেছে। সিনক্রিয়েট না করে কী হয়েছে বলুন।'' "সিনক্রিয়েট আমি করছি না। এই লোকটাকে আপনারা পুলিশে দেবেন। এটাই ফাইনাল।" "কেন? কী করেছে সে?" "কী করেছে! এই শয়তানটার কাছেই জিজ্ঞেস করুন ও কী করেছে।" "এই, আপনি কী করেছেন?" মন্তাজ ধমক দিয়ে জিজ্ঞেস করলো ফড়িংকে। "আমি কিছু জানি না। এই স্যার হঠাৎ আইসা আমার কলার চাইপা ধরছে।" "তুই শালা মিথ্যুক। তুই কিছু করিস নি? দাঁড়া দেখাচ্ছি।" রাগে গজগজ করতে অলোক পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করে মন্তাজের সামনে ধরলো। অলোক স্টেজের সামনে থেকে ফড়িং শাহ ও বাচ্চাদের ভিডিও করেছিলো, সেটাই চালু করে দিলো। মন্তাজ ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ দেখে আমতা আমতা করে বললো, "অলোক বাবু, ধোঁয়ার কারণে অনেক কিছুই তো স্পষ্ট দেখা যাইতেছে না। মানে আমি বলতে চাচ্ছি যে..." "মানে? স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে সবকিছু। This culprit is a chi*ld mo*lester। এই দেখুন, (ভিডিওটা পুনরায় টেনে দিয়ে), এই মেয়েটাকে কোলে বসিয়ে কী করছে এই নরকের কীট।" অলোকদের এইসব কথাবার্তা চলার সময়ে চারিদিকে বেশ ভীড় জমে গেল। সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। মন্তাজ নীচু গলায় অলোককে বললো, "অলোক বাবু, আপনি যা দেখাতে চাচ্ছেন সেটা আমি দেখেছি, কিন্তু সমস্যা অন্যখানে। এই বিষয়টা খুবই সেন্সিটিভ। বাচ্চাটা কিন্তু কমপ্লেইন করেনি, বরং আপনি চিৎকার করে লোক জড় করছেন। এত লোকজনের সামনে যদি এখন এই ভিডিও দেখিয়ে বাচ্চাটাকে খুঁজে বের করে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে যাই তাহলে সেটা বাচ্চা ও তার বাবা মায়ের জন্য কতটা ট্রমাটিক হবে, আপনি বুঝতে পারছেন না? তাছাড়া সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমাদের সোসাইটির প্রেসিডেন্ট খুব চেষ্টা করছেন আমাদের সোসাইটির একটা ভালো ইমেজ তৈরি জন্য। বিল্ডার্সদের কোটি কোটি টাকার ইনভেস্টমেন্ট আছে এখানে। ভবিষ্যতে এটাকে ভিভি আই পিদের রেসিডেন্সিয়াল হিসেবে গড়ে তোলার প্লান রয়েছে।এখন যদি এরকম ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে তবে সোসাইটির ইমেজটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বুঝতেছেন?" "তার মানে আপনারা কিছুই করবেন না?" বিস্মিত হয়ে বললো অলোক। "অবশ্যই করবো। আপনার সাথে বেয়াদপি করার অপরাধে ওকে এক্ষুণি মেলা থেকে বের করে দেব। তবেই তো মিটে গেল।'" ''না, মিটে গেল না। দেখুন, আমি একজন সাংবাদিক। আমি এই অন্যায় মানতে পারবো না। আপনারা এক্ষুণি ওকে পুলিশে দেবেন। আমার কাছে প্রমাণ আছে। আমি আপাতত কোন সিন ক্রিয়েট করছি না। তবে যদি আপনারা ব্যবস্থা না নেন তবে আমি পত্রিকায় আপনাদের বিরুদ্ধে লিখবো৷ তখন দেখবো আপনার প্রেসিডেন্টের সম্মান কই যায়।" অলোকের হুমকিতে মন্তাজ কিছুটা দমে গেল। তবে ফড়িং শাহ কথা বলা শুরু করলো। "স্যার আমারে পুলিশে দিয়েন না। আমি ভুল কইরা থাকলে চইলা যাইতাছি। তারপরেও পুলিশে দিয়েন না। একবার পুলিশের খাতায় নাম উঠলে আমারে আর কেউ অনুষ্ঠানে ডাকবো না। আমার শো বন্ধ হইয়া যাইবো৷ আমি গরীব মানুষ। আমার পেটে লাত্থি দিয়েন না।" ফড়িং শাহ অলোকের হাত চেপে ধরে অনুনয় করতে লাগলো। অলোকের মনে হল এই লোকটা নির্ভেজাল অভিনয় করছে। সে মোটেও অনুতপ্ত না। অলোক নিজের সিদ্ধান্তে অটোল রইলো। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে উপস্থিত হল কিন্ডারগার্টেন মাঠে। মেলায় উপস্থিত জনতার মাঝ দিয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে গাড়িতে তুলে নিলো ফড়িং শাহকে। মন্তাজ অলোকের পাশে দাঁড়িয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে বললো, "প্রেসিডেন্ট স্যার বিষয়টা একদমই ভালো ভাবে নেবেন না। উনি খুব কড়া মানুষ। অলোক বাবু, আপনি বড় ঝামেলা করে ফেললেন।" অলোক মন্তাজের কথা শুনেও না শোনার ভান করে পুলিশের গাড়ির দিকে এগিয়ে গেল। ফড়িং শাহ-কে গাড়িতে তোলার মুহূর্তের একটা ছবি তুলতে চায় সে। নারী দিবসের বিশেষ সংখ্যায় চাই*ল্ড মলে*স্টিং নিয়ে একটা লেখা লিখবে বলে মনে মনে ঠিক করে ফেলেছে। ঐ লেখা লিখবার সময়ে ছবিটা কাজে আসবে। অলোকের পাশে শান্তি এসে দাঁড়ালো৷ সেও তাকিয়ে আছে গ্রেপ্তার হওয়া ফড়িং শাহের দিকে। হঠাৎ অলোক খেয়াল করলো ফড়িং শাহ পুলিশের গাড়িতে বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। তাকানোর ভঙ্গিতে কী যেন আছে, আগের সেই ভীতু ভাব নেই। রাতারাতি লোকটার চেহারা ও শারীরীক ভাষা বদলে গেছে। আগে খানিকটা কুঁজো হয়ে ছিলো, আর এখন পিঠ সোজা করে বসে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে অলোক ও শান্তির দিকে তাকিয়ে রয়েছে। ফড়িং শাহ ডান হাতে মাথার হ্যাট খুলে Hats off করার মতো ভঙ্গি করলো অলোকের উদ্দেশ্যে, মুখে তার বিস্তৃত অদ্ভুত হাসি। বাম হাতের মাঝের দুই আঙ্গুল ভাঁজ রেখে প্রথমা আর কনিষ্ঠা আঙ্গুল সোজা করে হাত কপালে ঠেকালো। অলোক জানে এটাকে ডেভিল'স হর্ন সাইন বলে। রক ব্যান্ডের সদস্যরা এটা সাইন জনপ্রিয় করে তুললেও তারা এই সাইন দেখানোর সময়ে হাত কপালে ঠেকায় না। এই লোকটা ওকে এটা দেখাচ্ছে কেন? ওর ঐ শয়তানি হাসির অর্থ কী? অলোকের মনে তীব্র অস্বস্তি বোধ তৈরি হতে লাগলো ৷ সবার সামনে দিয়ে ফড়িং শাহকে নিয়ে পুলিশের গাড়ি ধীরে ধীরে গতি বাড়ি বাড়িয়ে চলে গেল মেলা প্রাঙ্গন ছেড়ে। এই ঘটনাটি ছবিসহ নারী দিবসের বিশেষ ক্রোড়পত্রে প্রকাশ করে অলোক। সম্পূর্ণ ক্রোড়পত্রটিই প্রশংসা পায় বিভিন্ন মহল থেকে, বিশেষত অলোকের লেখাটি নিয়ে আলোচিত হয় নানা সেমিনারে। লেখক হিসেবে অলোক বেশ পরিচিত মুখ হয়ে ওঠে। এতটা সাফল্য অলোকের কাছেও অপ্রত্যাশিত ছিল। এক বিকেলে অফিসের নিজের কিউবে বসে কাজ করতে করতে পিওন এসে খবর দিল প্রধান সম্পাদক নাদের আলী তাকে ডেকে পাঠিয়েছে। অলোক হাতের কাজ সংক্ষেপে শেষ করে হাজির হয় নাদের আলীর অফিস কক্ষে। দরজা ঠেলে প্রবেশ করার পর ওকে যত্ন করে বসায় নাদের। সংক্ষিপ্ত কথায় যে খবরটি তাকে জানানো হয় তা হলো, তাকে সিনিয়র সহ সম্পাদক পদে প্রমোশন দেওয়া হয়েছে এবং সাপ্তাহিক একটি বিশেষ সাময়িকী প্রকাশ করা হবে, সেটার দায়িত্ব তাকে দেওয়া হবে। অলোকের সম্মান ও স্যালারিও আগের চেয়ে অনেকটা বেড়ে যাবে। তাকে বসার জন্য আলাদা ঘর দেওয়া হবে। এমন অপ্রত্যাশিত সাফল্যে অলোক বিস্মিত না হয়ে পারলো না। মনে মনে খুশির প্রবল জোয়ার বয়ে গেল ওর। নিজের ডেস্কে ফিরেই কল করলো শান্তির নাম্বারে। এমন আনন্দের সংবাদটি গরমাগরম জানিয়ে দিতে চাইলো প্রিয়তমা স্ত্রীকে। কিন্তু অনেকক্ষণ রিং বাজার পরেও রিসিভ করলো না শান্তি। অলোক নিরাশ হয়ে একসময়ে কল কেটে দিল। রাতে ঘরে ফিরলো একগাদা ফুল, আইসক্রিম এবং মিষ্টি নিয়ে। ভেবেছিল শান্তিকে নিয়ে প্রমোশনের আনন্দ সেলিব্রেট করবে। কিন্তু তা আর হলো কই! ঘর সম্পূর্ণ খা খা করছে। শান্তি অফিস থেকে ফেরেনি। ফ্রেশ হয়ে চুপচাপ অপেক্ষা করতে লাগলো অলোক৷ রাত ১১টা বেজে গেলেও শান্তির ফেরার কোন নাম গন্ধ নেই। ইচ্ছে করেই কল করলো না অলোক। শান্তি ঘরে ফিরলো ১২টার একটু পরে, ফিরেই অলোকের সামনে হরবর করে বলতে লাগলো অফিসের কাজের চাপে কীভাবে আটকে গেছিলো, অফিস থেকে বেরিয়ে কোন সিএনজি পায়নি, উবারেও কেউ আসতে চাচ্ছিলো না এদিকে, রাতে অলোক খেয়েছে কী না ইত্যাদি। শান্তি বাথরুমে অনেক ক্ষণ শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসে বললো, "আমার ক্ষিধে নেই। তুমি খেয়ে নাও প্লিজ। আমি খুব টায়ার্ড। শুতে গেলাম।' অলোকের ফুল, মিষ্টি কেক তেমনিই পড়ে রইলো। শান্তি বিছানায় গা ছেড়ে দিয়ে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল, যেন অনেক পরিশ্রম হয়ে গেছে তার। একাকী রকিং চেয়ারে বসে রাতটা কাটিয়ে দিল অলোক, ওর প্রমোশনের আনন্দটা আর শেয়ার করা হল না শান্তির সঙ্গে। ৩. তিন মাস পরের কথা। রিজেন্ট আন্তর্জাতিক কমিউনিটি সেন্টারে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দৈনিক প্রথম সকাল পত্রিকার পক্ষ থেকে নাটক, সিনেমা, মিউজিক ভিডিও সহ নানা বিষয়ে পুরষ্কার দেওয়া হবে সেই উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে এই অনুষ্ঠানের। পুরষ্কার বিতরণকে ঘিরে বিশাল স্টেজে নাচ গান, কৌতূকসহ নানা সেগমেন্ট থাকছে, আরো থাকছে মূল অনুষ্ঠানের পরে নিমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বিশেষ ডিনার ও পোস্ট প্রাইজ সেলিব্রেশন পার্টি। রাষ্ট্রদূত, সচিব, সেনাকর্মকর্তাসহ দেশ বিদেশের অনেক হাই প্রোফাইল মানুষ এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে এসেছেন। সেলিব্রেটিরা জমকালো ড্রেসে রেড কার্পেটে গ্লামার ছড়াচ্ছেন৷ বিশেষত নারী সেলিব্রেটিরা কে কার চেয়ে বেশি ক্যামেরা টানতে পারছেন তার প্রতিযোগীতায় নেমে গেছেন৷ অলোককে অনুষ্ঠানের কাজে খুবই ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে, কারণ এই সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও পরিচালনার দায়িত্ব অলোকের উপরে দেওয়া হয়েছে৷ অলোকের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। কত হাই প্রোফাইল সেলিব্রেটি, ভিভি আই পি ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত আসছেন, তাদেরকে কীভাবে রিসিভ করা হবে, কোথায় বসানো হবে এসবকিছুই প্রতিনিয়ত নজরে রাখতে হচ্ছে অলোককে। এতসব সেলিব্রেটিদের সবাইকেই যে অলোক চিনতে পেরেছে তেমন নয়। অনেককেই পূর্বে ইউটিউবে কিংবা টিভিতে দেখেছে। পুরুষ সেলিব্রেটিদের চেয়ে নারী সেলিব্রেটিদের সংখ্যাই বেশি। এদের বেশিরভাগেরই অনুষ্ঠানে পরে আসা পোশাক আশাক ও উপস্থিত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে টিভি বা ইউটিউবের ব্যক্তিত্বের আকাশ পাতাল পার্থক্য। নাটকে যে মধ্যবয়সী মহিলা চিরন্তন বাঙ্গালি মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতো, এই অনুষ্ঠানে সে টিন এজ মেয়েদেরকেও হার মানিয়েছে। নারী সেলিব্রেটিদের সকল প্রসাধণের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো নিজের শরীরটা কীভাবে আরো দৃষ্টিগ্রাহ্য করে তোলা যায়। তাদের সৌন্দর্য্য অবলোকন থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয়। যার যে সম্পদ নেই, সেটাকে দেখানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা তো রয়েছেই, আবার যার প্রাকৃতিকভাবেই আছে সেটাকে আরো বাড়িয়ে দেখাতে কেউ পিছিয়ে থাকেনি। অপ্রাপ্তবয়স্ক টিন এজ সেলিব্রেটিগুলোও এদিক দিয়ে পিছিয়ে নেই। এরা পূর্ণ বয়স্ক পীনোন্নত যৌবনউদ্বৃত্ত রমণীদের সাথে পাল্লা দেওয়ার জন্য নিজেদের শরীরে যেন সমুদ্রের ঢেউ তুলেছে। এদের কারো কারোর স্কার্টের সাইজ এতই ছোট যে সামনে ঝুঁকলে পেছনে দণ্ডায়মান মানুষটি প্যান্টির রঙ বলে দিতে পারবে। কারোর পরনের লেদার জিন্স এতই টাইট যে অলোকের আশঙ্কা যে কোন সময়ে ওগুলোর পেছনের সেলাই ছিঁড়ে গিয়ে পাছা উদাম হয়ে যেতে পারে৷ এসব কিছুই অলোকের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। অনুষ্ঠানের মূল স্টেজে একের অপর সেগমেন্ট চলছে। ওর নিজের ধারণা এখন পর্যন্ত সবকিছু ভালোই সামলে নিয়েছে সে। আর অল্প কিছুটা বাকী আছে। সবশেষ এওয়ার্ড ঘোষণার আগে একটা ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল নাচের পারফর্মেন্স আছে, ঐটা দিয়ে সাংস্কৃতিক পোগ্রাম শেষ হবে। এরপরে এওয়ার্ড দেওয়া হলে বাছাইকৃত অতিথিদেরকে হোটেলের ব্যাংকুয়েট হলে এসকোর্ট করে নিয়ে যাওয়া হবে ডিনারের জন্য। সেখানে সংক্ষিপ্তভাভে কিছু বিশেষ পোগ্রাম থাকবে ডিনারের সময়টাকে উপভোগ্য করে তোলার জন্য। ঐ অনুষ্ঠানটির সহ পরিচালক অলোক এবং স্বয়ং দৈনিক প্রথম সকালের প্রধান সম্পাদক নাদের উপস্থাপনা ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন। অলোক স্পিকারে উপস্থাপকের ঘোষণা শুনতে পেল, সর্বশেষ পারফর্মারের নাম বলা হয়েছে মাইকে। সে কনফারেন্স হলের একপ্রান্ত দিয়ে লোকের ভীড় ঠেলে স্টেজের কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ালো। প্রচণ্ড আলোয় চোখ ঝলছে যাচ্ছে ওর, তবে এই আলোর তীব্রতা শতগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে একজন মানুষ। স্টেজে নাচের পোশাক পরে উপস্থিত হয়েছে শান্তি, অলোকের প্রিয়তমা স্ত্রী। তবে আজকে অলোক নিজেই যেন নতুন করে আবিষ্কার করছে নিজের বিবাহিত স্ত্রীকে। চারিদিকে হাজার হাজার আলোক বাতির মাঝে সোনালি শাড়ি ও গহনাতে শান্তিকে দেখে মনে হচ্ছে যেন মর্ত্যে নেমে আসা ইন্দ্রপুরের কোন অপ্সরা। পার্থক্য হচ্ছে উর্বশী, রম্ভা, মেনকা কিংনা ঘৃতাচীরা নেমে আসতেন তাদের মোহনীয় নৃত্যকলার মায়ায় শত শত বছর ধরে ধ্যানমগ্ন তপস্যীদের ধ্যান ভাঙ্গাতে। ধ্যানমগ্ন ঋষীদের মনে প্রণয়ের জোয়ার আসতো অপ্সরাদের নৃত্যের ছন্দে। অবশ্য একবিংশ শতাব্দীতে মর্ত্যলোকের অপ্সরাগণ কোন বুড়ো ঋষীর ধ্যান ভাঙতে নাচেন না। তারা নাচেন হাজার মানুষকে বিনোদিত করার জন্য। আজকেও শান্তিও সেই উদ্দেশ্যে উপস্থিত হয়েছে স্টেজে। শান্তি লক্ষ করেনি যে অলোক স্টেজের একেবারে কাছ থেকে ওকে দেখছে। ওর সব মনোযোগ সামনে উপবিষ্ট হাজার হাজার দর্শকের দিকে। মঞ্চে নাচের পজিশন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে, সাউন্ড সিস্টেম ঠিক ঠাক করার কাজ তখনো চলছে। শান্তির সাজপোশাক দেখে সহজেই অনুমেয় সে ভারতীয় ক্লাসিক্যাল নাচ পরিবেশন করবে। সোনালী কাজ করা পাড়ের রুপালী সিল্কের ধূতির মত পোশাক শান্তির কোমর থেকে নীচে নেমে ওর তানপুরার মত গোল নিতম্ব ও পুরুষ্ট জঙ্ঘার সঙ্গে মিশে আছে। প্যান্টের হিপ ওর ওর ধবধবে ফর্সা পেটের নাভী মূলের কয়েক আঙ্গুল নীচে।শরীরের উর্ধ্বাঙ্গে রয়েছে নানা রকমের ভারী অলঙ্কার, একটি মাত্র লাল রঙের ব্লাউজ (ব্রেসিয়ারের সামান্য আপডেট ভার্সন) শান্তির বক্ষদুটোকে লোকচক্ষু থেকে আড়াল করে রাখার দায়িত্ব পেয়েছে। নাহ! — অলোকের মনে হল ওরা আড়াল করার দায়িত্ব পায়নি, বরং ঐ অংশটাকে আরো প্রকট করার দায়িত্ব নিয়েছে। ব্লাউজটা স্বচ্ছ চিকন স্ট্রাপ দিয়ে কাঁধের উপরে আটকে আছে, প্যাডেড ব্রায়ের মত কাপদুটো শান্তির বৃহৎ স্তন দুটোকে চেপে দৃশ্যমান গভীর খাঁজ তৈরি করেছে। শঙ্খের মত ফর্সা স্তনের উপর আলো পড়ে চকচক করছে, হয়তো ব্লাউজের উপর দিয়ে স্ফিত হয়ে ওঠা বুকের উপরে কিছুটা মেক আপ করা হয়েছে বলে এরকমটা দেখাচ্ছে। অলোক ভালো করেই জানে এই অনুষ্ঠানে আগত যত সেলিব্রেটি আছে, তাদের যে কাউকে টেক্কা দেওয়ার মত রূপ যৌবন শান্তির রয়েছে। নিজের সৌন্দর্য্য প্রকাশের ক্ষেত্রে শান্তির ভেতরে কখনোই কোন জড়তা ছিল না। নাচতে নেমে ঘোমটা দেওয়ার মত আদিখ্যেতাও শান্তির মাঝে নেই। অলোক মনে মনে ভাবে ইন্দ্রপুরের অপ্সারাদের নৃত্যকলা দেখে ঋষীরা না কি প্রেমে পড়তেন। কিন্তু আসলেই কী তাই? শত শত বছর ধরে ধ্যানমগ্ন ঋষী কেন হঠাৎ দেখা এক নৃত্যরত নারীর প্রেমে পড়বে? এ কী প্রেমের মোড়কে স্রেম যৌনতা নয়? ঋষীরা অপ্সারদের নৃত্যরূপে কামাসোক্ত হতেন। এটাই আসল কথা। তো একবিংশ শতাব্দীর উর্বশী, রম্ভারা সেই অপ্সারাদের মতই কী দর্শকদের মনে কামানুভূতি জাগ্রত করে না? ইতোমধ্যে শান্তি নাচতে শুরু করেছে। প্রত্যাশিতভাবেই মোহনীয় ভঙ্গীতে দুলছে শান্তির প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। পূর্ণ যুবতীর নারীর ভরা যৌবন উপচে পড়ছে ওর প্রতিটি নাচের স্টেপে। ক্লাসিক্যাল নাচ সম্পর্কে অলোকের তেমন ধারণা নেই। কেবল এটুকু জানে এ ধরণের নাচের একটা গল্প থাকে, মানব অনুভূতির বিভিন্ন দিক ছন্দের তালে তালে ফুটে ওঠে। শান্তির নাচের গল্পটা বোঝার চেষ্টা করে সে। শান্তির কোমরটা সমুদ্রের ঢেউয়ের মত দুলছে, কখনো কখনো সে নিজের নিতম্বটাকে দর্শকের দিকে ফিরিয়ে নাচে। কখনো সামনে ঝুঁকে ওর ভারী স্তন জোড়াকে দোলাতে থাকে। অলোকের চোখে নেশা ধরে যায় শান্তির নাচ দেখে। উর্বশী রম্ভাদের নাচ দেখে দেবতাদের চোখে এভাবে নেশা ধরে যেত হয়তো। নেশার ঘোরেই অলোক ওর কানে কানে একটি কণ্ঠ শুনতে পায়, "স্যার, ক্যাটারিং সার্ভিসের পক্ষ থেকে আপনার জন্য স্পেশাল ড্রিংক্স। এই নিন স্যার।'' অলোক স্টেজের উপরে শান্তির দিকে চোখ রেখেই গ্লাস হাতে নেয়। কণ্ঠটা আরো বলতে থাকে, " স্যার, ম্যাডামকে হেব্বি ফাইন লাগছে। হেমামালিনী, ক্যাটরিনা কায়েফ, সানি লিওন সব ফেল, একেবারে আইটেম বোম্ব।" (খিক খিক হাসি) "আজকের প্রোগ্রামের সবচেয়ে ভাইরাল অংশ হবে ম্যাডামের নাচ।" "হুম", অলোক গম্ভীরমুখে গ্লাসে চুমুক দেয়। গ্লাসে কী ড্রিংক্স দিয়েছে কে জানে? এই অনুষ্ঠানে এলকোহলিক ড্রিংক্সের ব্যবস্থা আছে। অতিথি আপ্যায়নের জন্যে অলোক নিজেই ব্যবস্থা রেখেছে। কিন্তু এই গ্লাসে কোন ধরণের এলকোহল দিয়েছে সেটা ধরতে পারলো না, তবে খেতে দারুণ স্বাদ। একদিকে স্টেজের উপরে শান্তি, অন্যদিকে হাতের গ্লাসের তরলের ধাক্কায় অলোকের নেশা আরো গাঢ় হয়ে উঠলো। কণ্ঠটা বলতে থাকলো, " স্যার, ম্যাডামের ফিগারটা কী দারুণ!" (জিহ্বা দিয়ে ঝোল টানার শব্দ) "ঐ দেখেন স্যার সামনের সারিতে বসা লোকগুলা কীভাবে তাকিয়ে আছে ম্যাডামের দিকে। আপনি ভালো কইরাই জানেন ঐ লোকগুলোর মতলব কী। আজকে ওরা যে দৃষ্টিতে তাকায়ে আছে। কালকে সারা দেশের মানুষ দেখবে ম্যাডামরে। হেহ হেহ হেহ... কেমন হবে স্যার?" অলোক নেশার ঘোরে জড়ানো গলায় বলে, "মানে? কী বলতে চাও তুমি ? কী কী? এই, কে তুমি? এ?" উত্তেজিত হয়ে কণ্ঠের মালিককে দেখতে গিয়ে কাউকে খুঁজে পেল না অলোক। ওর আশেপাশে অনেক মানুষ, কিন্তু এরা সবাই স্টেজের উপরে শান্তির পারফর্মেন্স দেখতে ব্যস্ত। ওরা কেউ ওর সঙ্গে কথা বলার মত অবস্থায় নেই, তাছাড়া ওরা ক্যাটারিং এর লোকও নয়। অলোক ওর হাতের গ্লাসের দিকে তাকালো। রক্তের মত লাল রঙের ড্রিংক্স। এটা কে দিয়ে গেল ওকে? কখন যে গ্লাস প্রায় খালি করে ফেলেছে সেটাও মনে করতে পারলো না অলোক। হঠাৎ তুমুল হাততালি আর হর্ষধ্বনির মাঝে ওর সম্বিৎ ফিরলো। শান্তির নাচ শেষ হয়েছে। দর্শকরা প্রায় সবাই হাততালি দিচ্ছে, শান্তি মাথা নুয়ে দর্শকদের এই অভিবাদন গ্রহণ করে ব্যাক স্টেজে চলে গেল। অলোকের হাতের ওয়াকি টকি গুড় গুড় শব্দ করে উঠলো, "অলোক বাবু আপনি কোথায়? এক্ষুণি প্রাইজ সিরিমনি প্রোগ্রাম ক্লোজ হবে। আপনি সিলেক্টেড অতিথিদের এসকোর্ট করে সাত তলায় গ্রান্ড হলে নিয়ে আসুন।" (দৈনিক প্রথম সকাল পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাদের আলীর নির্দেশ।) অলোক গা ঝাঁড়া দিয়ে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে। এই অনুষ্ঠানটি সফলভাবে শেষ করা ওর ক্যারিয়ারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফোকাস হারালে চলবে না। সে গটগট করে হেঁটে পরবর্তী পদক্ষেপে চলে গেল। শীঘ্রই ৫০ থেকে ৬০ জনের দেশ বিদেশের নির্ধারিত আমন্ত্রিত অতিথিদের একটি দল রিজেন্ট আন্তর্জাতিক কমিউনিটি সেন্টারের গ্রান্ড হলে মিলিত হল। এই দলের সকলেই বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন, বেশিরভাগই পুরুষ, গড় বয়স ৫০ এর উপরে। এদের চলাফেরায় নাক উঁচু আভিজাত্যের ছাপ। বিশাল গ্রান্ড হলে ব্যুফে স্টাইলে নানা পদের খাবার সাজিয়ে রাখা আছে টেবিলগুলোতে। অতিথিরা ছোট ছোট খাবারের প্লেট হাতে আড্ডা দিতে দিতে খাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ছোট টেবিলে বসে খাচ্ছেন। কারো হাতে মাংশের প্লেট, কারো হাতে কেবলই ওয়াইনের গ্লাস। Warm lighting এর আলোয় আর Live ব্যান্ডের বাজানো ধীর গতির সুরের মূর্ছনায় মনে হচ্ছে যে এইটা এনালাইটেন যুগের ইউরোপের কোন অভিজাতদের মিলনমেলা। চারিদিকে দামী দামী পারফিউমের সুগন্ধ মৌ মৌ করছে। অলোক ওয়াকি টকি হাতে বিশাল হল রুমের একপাশে দাঁড়িয়ে চারিদিকে নজর রাখছে। কোথাও যাতে কোন অসুবিধার সৃষ্টি না হয়। এখানে আসার পরে প্রধান সম্পাদক নাদের আলী একবার ওর কাঁধ চাপড়ে দিয়ে গেছেন। তার মানে হল এখন পর্যন্ত ওর কাজে উপরমহল সন্তুষ্ট। অলোক এই ব্যাপারটায় বেশ আত্ম তুষ্টি অনুভব করলো। গত তিনমাস ধরে ওর ভাগ্যটা খুবই সুপ্রসন্ন। যেন উন্নতির জন্য সব সু্যোগ নিজে থেকে ওর সামনে এসে ধরা দিচ্ছে। অলোকও সেগুলো লুফে নিতে ভুল করছে না। আজকের অনুষ্ঠানটি নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে পারলে আরো একধাপ উন্নতির শিখরে পৌছে যাবে সে। তার জন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখছে অলোক। হাতের ওয়াকি টকি শক্ত করে ধরে রেখেছে। খাবার, মদ, অতিথিদের সহায়তাকারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টর থেকে নিয়মিত আপডেট নিচ্ছে, যাতে নাদের আলীর যে কোন প্রশ্নে উত্তর দিতে তৈরি থাকে। এত সাবধানী মনও মাঝেমাঝে অন্য একটি মানুষের খোঁজে বিচলিত হয়ে উঠছে। সেই মানুষটি হল শান্তি। অলোক মনে মনে আশা করেছিল শান্তিকেও এই পার্টিতে দেখতে পাবে। সে নিজে শান্তির জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ছাড়পত্রের ব্যবস্থা করেছিল। ব্যাক স্টেজ থেকে এতক্ষণে ড্রেস পরিবর্তন করে চলে আসার কথা। কিন্তু এখনো তাকে যাচ্ছে না। অলোক একবার ভাবলো শান্তিকে কল করবে কী না। পরে মনে পড়লো অতিথিদের সিকিউরিটির খাতিরে পারফর্মার ও ক্যাটারারদের ব্যক্তিগত মোবাইল বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ মোবাইল ফোনেও শান্তিকে পাওয়া সম্ভব নয়। অলোক বিড়বিড় করে কয়েকবার আনমনেই বলে, "শান্তি তুমি কোথায়!" এই পার্টির অভিজাতদের ভেতরে কেউ অলোকের পূর্ব পরিচিত নেই। ওরা সকলে সমাজের এতটাই উপরের স্তরের যে সেখানটায় অলোকের মত লোকদের যাতায়াত নেই। ফলে সাধারণ এক কর্মচারীর মতোই দাঁড়িয়ে রইলো এক প্রান্তে। আচমকাই তাক্র অবাক করে দিয়ে কেউ একজন তার নাম ধরে ডাক দিলো। স্যুট টাই পরা এক লোক ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলো অলোককে। "আরে বন্ধু, কী খবর? কতদিন পরে দেখা।" "হ্যাঁ। তোকে এখানে দেখবো ভাবি নি।" "আমি কিন্তু জানতাম তোকে এই অনুষ্ঠানে পাবো। পোগ্রামে পুরো সময়টায় তোকে খুঁজে বেড়িয়েছি। অবশেষে তোকে পেলাম।" অলোকের সঙ্গে কথা এই লোকটি ওর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের রুমমেট আরিফ নামের সেই ছেলেটি যে অলোকের সঙ্গে শান্তির প্রেম হতে সাহায্য করেছিল। অলোক উত্তর দিল, "আমাকে খুঁজে পাবি কীভাবে। নানাকাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তারপর তোর কথা বল, তুই এখানে কীভাবে?" "আমি মোকাম গ্রুপের প্রধান আক্কাস মিয়ার পার্সোনাল সেক্রেটারি পদে চাকরি করছি। স্যার আবার আমাকে খুব বিশ্বাস করেন। আমাকে ছাড়া কোন পার্টি এটেন্ড করেন না। তবে এবার তোর সাথে দেখা করার আশায় আমি আরো বেশি আগ্রহ নিয়ে এসেছি।" অলোকও মনে মনে খুবই খুশি হয় নিজের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুকে পেয়ে। কাছেই ওয়াইনের গ্লাস নিয়ে ঘুরতে থাকা ওয়েটারকে ডেকে বন্ধুর হাতে একটা গ্লাস তুলে দেয়, নিজেও তুলে নেয় আর একটি। গ্লাসে চুমুক দিয়ে বুঝতে পারে এটা পরিচিত কোন হুইস্কি নয়। স্টেজের কাছে যে ধরণের ড্রিংক্স খেয়েছিল এটাও একইরকম। খেয়ে বেশ ভালো লাগছে। আরিফও ওর গ্লাসে কয়েক চুমুক দিয়ে বলতে লাগলো, "তারপর বল, তোর দিনকাল কেমন যাচ্ছে?" "যাচ্ছে একরকম।" "দৈনিক প্রথম সকাল-এর মত এলিট পত্রিকায় উঁচু পদে আছিস। তোর কর্পোরেট লাইফ যে ভালো যাচ্ছে সেটা বুঝতেই পারছি। শান্তির সঙ্গে তোর কনজুগাল লাইফ কেমন যাচ্ছে সেইটা বল শালা? কোন ভনিতা করবি না একদম।'' অলোক হেসে বলে, " আরে না না। ভনিতার কি আছে! শান্তির সাথেও সুন্দর সংসার চলছে।" "কিছু মনে করিস না দোস্ত। অনেকক্ষণ ধরেই পেটে কথা চেপে রেখেছি। আজকে শান্তিকে স্টেজে দেখে তোকে হিংসেই হচ্ছিল। ক্যাম্পাস থেকেই হতো, তবে এই কয় বছরে শান্তির রূপ যৌবন এমন খোলতাই হয়েছে যে তোর কপালটাকে হিংসা না করে পারছি না।" অলোক কী বলবে বুঝতে না পেরে অপ্রস্তুত হেসে কাঁধ ঝাঁকালো। আরিফ বলে যেতে লাগলো, "শান্তির সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার কী জানিস? She is a progressive girl. লাইভ স্টেজে ওরকম পোশাকে নাচা চারটিখানি কথা নয়। আমি তো চোখই ফেরাতে পারছিলাম না শান্তির শরীর...আহ... আই মিন... নাচ থেকে। হেহ হেহ হেহ... She has become more voluptuous than ever." নার্ভাস ভঙ্গীতে হেসে গ্লাসে চুমুক দিল আরিফ। অলোক বললো, "শান্তি সবসময় আমার চেয়ে প্রোগ্রেসিভ ছিল। আমার মতন মধ্যবিত্ত ছেলেকে শান্তি বিয়ে করবে এটা আমি কখনো ভাবিনি। তোরা ছিলি বলেই আমাদের প্রেমটা হয়েছিল। By the way, একদিন আমার বাসায় আয় বেড়াতে। বিয়ে করেছিস?" "আরে না। এই যুগে বিয়ে করে কে মারা খায় শালা! আসবো তোর বাসায়। তবে তার আগে তুই দেখা কর আমার সঙ্গে। তোকে একটা ঠিকানা দিচ্ছি।" আরিফ পকেট থেকে একটা কার্ড বের করে অলোকের হাতে দিল। কার্ডে কেবল ছোট্ট করে একটি ঠিকানা লেখা, আর কিছু নেই। "এটা কার ঠিকানা?'' বিস্মিত হয়ে অলোক জানতে চাইল। "এখন বলবো না। এই ঠিকানায় আগামী সপ্তাহের এই দিনে চলে আসবি। বাড়ির গেটে সিকিউরিটি প্রশ্নে বলবি 'আমি ঘন্টা শুনে এসেছি।' যখন জিজ্ঞেস করবে কীসের ঘন্টা, বলবি যে 'কুহকের ঘন্টা'। তুই লেখক মানুষ, লেখার জন্য ভালো গল্প পেয়ে যাবি নির্ঘাৎ। আমিও থাকছি সেখানে।'' বলে আরি চোখ টিপ দিল। " কী আছে ওখানে? রহস্য করতেছিস ক্যান শালা?'' অলোক বিরক্ত হয়ে বলে। "মিছেমিছি রহস্য করছি না বন্ধু। ওরকম কিছু আছে বলেই করছি। সবটা এখন বলবো না। তোকে আগেই বলেছি আমার বস মোকাম গ্রুপের মালিক আক্কাস মিয়া আমাকে সবখানে নিয়ে যায়। এই লোকের সুবাদে এমন এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে যে আমি বললে তুই বিশ্বাসই করবি না। নিজের চোখে বরং দেখে যা। আগামী সপ্তাহে আক্কাস মিয়ার ইনভাইটেশন আছে এই ঠিকানায়। আমিও থাকবো তার সঙ্গে। তুই চলে আয়। বাকীটা ওখানে গেলেই বুঝবি। You might find something surprising." আরিফের কণ্ঠ রহস্যময় মনে হয় অলোকের কাছে। এর মধ্যে আরিফের মোবাইল ফোন বেজে ওঠে। স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই আরিফ ব্যস্ত হয়ে বলে, "আমি গেলাম রে বন্ধু। আক্কাস মিয়া খোঁজ লাগিয়েছে। পরে কথা হবে।" এই বলে দ্রুত সরে পরলো আরিফ। অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ, তারপরেও আরিফের কাছে ফোন এলো কী করে এটা ভেবে অবাক হল অলোক। আরিফের দিয়ে যাওয়া কার্ডের ঠিকানার দিকে তাকিয়ে ভাবার চেষ্টা করলো এটা কোথায়? ঠিকানাটা একদমই ওর কাছে পরিচিত লাগছে না। এটা কী ঢাকার বাইরে? এমন সময় ওর ওয়াকি টকি বেজে ওঠে, নাদের আলী ওকে গ্রান্ড হল সংলগ্ন একটি গেস্ট রুমে তৎক্ষণাৎ আসতে নির্দেশ দেয়। অলোক ছুটে যায় নাদের আলীর কাছে। গেস্ট রুমের দরজায় দাঁড়ানো সিকিউরিটি গার্ড বিনা প্রশ্নে অলোককে ঢুকতে দিল। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে অলোকের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। ঘরের কিং সাইজের খাটের উপরে দুইটা মেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে আছে। একজন উপুড় হয়ে শুয়ে আছে, অন্যজন কাৎ হয়ে শুয়ে আছে। দুজনেরই চেহারা দেখে অলোক চিনতে পারলো ওদের, একজন বাংলা নাটকের অভিনেত্রী টয়া, অন্যজন অভিনেত্রী স্পর্শিয়া। অলোক হা করে তাকিয়ে থাকলো সেলিব্রেটি মেয়ে দুটোর অবস্থা দেখে।
05-02-2025, 01:46 AM
অসাধারণ! অসাধারণ! অনেকদিন পর পুরো প্লটনির্ভর একটি গল্প পড়ার সুযোগ পেলাম, যেখানে বেশ কয়েকটি রহস্যের আভাস দিয়ে গল্পের কাহিনীকে ধীরে ধীরে পরিবেশন করা হচ্ছে। যেন কোনো আধুনিক চলচ্চিত্র বা webseries এর চিত্রনাট্য। বলে না, কড়া পাকের মিষ্টির যেমন স্বাদ তেমন তা তৈরী করতে খাটুনি ও ধৈর্য্যের প্রয়োজন। জানতাম ভালো কিছু পাবো, কিন্তু যতোটা আশা করেছিলাম তার থেকেও অনেক বেশী পেলাম।
ভাইটি, এখন শুধুমাত্র একটি অনুরোধ, গল্পটিকে সম্পূর্ণ করো। কাহিনীর বুনোটকে যেমন tight রেখেছো. তেমনি বজায় রেখো; কিছুটা ছোটো হলেও চলে যাবে, কিন্তু শুধুমাত্র লম্বা করার জন্য লম্বা করো না। গল্পের স্বাদটাই মুখ্য। শুভেচ্ছা রইলো। নতুন পর্বের আশায় তো থাকবোই। তবে যখনই নতুন পর্ব নিয়ে আসো, তা যেন তেমনই সুন্দর হয়।
10-02-2025, 12:21 PM
(05-02-2025, 01:46 AM)ray.rowdy Wrote: ধন্যবাদ দাদা। গল্পটা খুব বেশি বড় হবে না মনে হয়। আমি অবশ্য লিখতে বসলে পূর্ব থেকে কোন কিছু নির্ধারণ করে রাখি না। দেখা যাক, এই গল্পের চরিত্রগুলোর কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। দয়া করে সঙ্গে থাকবেন ও ফিডব্যাক দিবেন৷
10-02-2025, 12:22 PM
10-02-2025, 01:36 PM
গল্পের গাঁথুনী ভালো। তবে নিয়মিত আপডেট না দিলে গল্পটা পড়ে মজা পাওয়া যাচ্ছে না।
লাইক ও রেপু রইল, এমন সুন্দর গল্পের জন্য।
11-02-2025, 02:55 AM
(10-02-2025, 12:21 PM)শূন্যপুরাণ Wrote: ধন্যবাদ দাদা। গল্পটা খুব বেশি বড় হবে না মনে হয়। আমি অবশ্য লিখতে বসলে পূর্ব থেকে কোন কিছু নির্ধারণ করে রাখি না। দেখা যাক, এই গল্পের চরিত্রগুলোর কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। দয়া করে সঙ্গে থাকবেন ও ফিডব্যাক দিবেন৷ দেখো, একটা কথা বলি? এই গল্পের লেখক হচ্ছো তুমি; তোমার গল্প বড়ো হবে না ছোটো হবে সে নিয়ে ভাবতে যেও না। তুমি গল্পে লেখার জন্য যে যে ঘটনা-মোচড়-চরিত্রগুলো ভেবে রেখেছিলে আর তাদেরকে ঠিকঠিক ফুটিয়ে তুলতে যতোটা লেখার দরকার ততোটাই লেখো। আমার তো মনে হয় না, কেউ তোমার কাছে দাবী রেখেছে যে বড়ো উপন্যাস লিখতে হবে। তাই তুমি গল্পটাকে তোমার মনে যে রকম ছক কষে রেখেছিলে সে অনুসারে লিখে যাও। তুমি শুধু এটুকু খেয়ালে রেখো যেন গল্পটাকে ঠিকভাবে শেষ করতে পারো। বাকী ছোটো কি বড়ো - গল্পের বহরের উপর ছেড়ে দাও।
শুভেচ্ছা রইলো, পরবর্তী পর্বের জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করছি। তবে জোরাজুরি করবো না। তুমি তোমার মতো করে পর্ব নিয়ে এসো, কিন্তু বাছা এই রকম সুন্দর হওয়া চাই।
15-02-2025, 12:12 PM
(09-01-2025, 08:35 PM) pid=\5850277' Wrote:
15-02-2025, 12:33 PM
Kub valo hochhe ... Next update r opekhai roilam
15-02-2025, 05:58 PM
তোমার স্তনের বোটায় মৃগনাভীর সুগন্ধের পসরা।
তোমার স্তনের দুলুনিতে ধরণী কেপে ওঠে থেকে থেকে।
15-02-2025, 11:25 PM
নতুন পর্বের আশায় প্রহর গুনে যাচ্ছি। জানি আশাহত হবো না, কেননা ভালো কিছু এমনিতেই আসে না, সময়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে। শুভেচ্ছা রইলো।
24-02-2025, 12:18 AM
প্রতীক্ষার ফল সুন্দর হবেই হবে।
11-03-2025, 01:24 AM
প্রতীক্ষার অবসান অনিবার্য্য, যেমন নিশার সমাপনে ঊষা।
28-03-2025, 01:55 AM
নতুন পর্বের অপেক্ষায় রয়েছি।
|
« Next Oldest | Next Newest »
|